পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা

0 comments

অর্থনীতি বার্তা | অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ধরনভেদে ১২০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এসব পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, কিছু জায়গায় ৭৫ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেটের তেজতুরী বাজার ও মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

মিরপুর-২ নম্বরের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এক সপ্তাহ আগে ভালো মানের পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। পাবনা ও রাজশাহীর পেঁয়াজ ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতাম। একটু খারাপ মানেরগুলো ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি করেছি। পাইকারি বাজার থেকে কিনতাম ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। এখন একই পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ৯৮ থেকে ধরনভেদে ১১০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরায় দাম বাড়াতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বেশি দামে কিনছি, তাই খরচ ও সামান্য লাভ রেখে বিক্রি করছি।

মিরপুর-১১ নম্বরের পেঁয়াজের আড়তের কাছের খুচরা বিক্রেতা কবির হোসেন বলেন, পেঁয়াজ ধরনভেদে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরায়ও দাম বেড়েছে। এখন প্রতি কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছি। আর কদিন পর দাম আরও বাড়বে।

কেন দাম বাড়বে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন কৃষকরা সব পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছে। কদিন পর কৃষকের কাছ থেকে আর পেঁয়াজ পাওয়া যাবে না। তাই দাম বাড়বে।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের কাঁচা বাজারেও বেশিরভাগ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। মাঝারি আকারের মসৃণ পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, আর তুলনামূলক নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়।

ফার্মগেটের তেজতুরী বাজার, মিরপুর ও আশপাশের অন্যান্য এলাকাতেও প্রায় একই দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

মিরপুর-২ নম্বরের বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা ইসরাফিল আলম বলেন, দুই সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজিতে কিনেছিলাম। আজ এসে দেখি ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি! এক সপ্তাহে কীভাবে এত দাম বাড়ল, বুঝতে পারছি না।

একই বাজারের ক্রেতা আঞ্জুমান আরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো জিনিসের দাম বাড়ছে। এখন পেঁয়াজও হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে মজুদও।

মিরপুর-১১ ও কচুক্ষেতের আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, আগের চেয়ে এখন দ্বিগুণ পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। কিছু আড়তের বাইরে ফুটপাতেও পেঁয়াজের বস্তা রাখা হয়েছে।

পাবনা ট্রেডার্সের মালিক নাজমুল হোসেন বলেন, এখন পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। বাইরে থেকে আমদানি হচ্ছে না। তাই দাম বাড়ছে। কিছু দিন পর দেশের বাজারে মুরিকাটা পেঁয়াজের সঙ্গে বাইরে থেকেও আমদানি হবে। তখন দাম কমবে।

তবে পাইকারি বাজারের কোথাও পেঁয়াজের মূল্যতালিকা দেখা যায়নি। মিরপুরের দুটি বড় পাইকারি বাজারের ১১টি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ১০টিতেই দাম লেখা বোর্ড নেই। এক দোকানে আংশিক দাম লেখা থাকলেও সব প্রজাতির পেঁয়াজের মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।

কেন মূল্যতালিকা নেই জানতে চাইলে একজন ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে এখন প্রশাসনের লোক আসে না। দেখার কেউ নেই, তাই লেখার দরকার হয় না।

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আজকের বাজার মনিটরিংয়ে থাকা এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজের অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়টি আমরা তদারকি করছি। আজই ফরিদপুর, পাবনাসহ বড় পাইকারি বাজারগুলোতে মনিটরিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা অফিস একযোগে কাজ করছে।

তিনি আরও জানান, ঢাকার বাজারে মূল্যতালিকা না থাকার কারণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক বৃহস্পতিবার, আসতে পারে আমদানির সিদ্ধান্ত

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পেঁয়াজের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কমিটি বৈঠকে বসবে। বৈঠকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আমদানি শুরু হলে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

You may also like

প্রকাশক: মো. আরফাত ছিদ্দিকী সম্পাদক: আলম চৌধুরী প্রধান কার্যালয়: ৪৩/সি, মায়াকানন, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪ ই-মেইল: info@arthoneetibarta.com ওয়েবসাইট: www.arthoneetibarta.com অর্থনীতি বার্তা (ইছামতি গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান)

Edtior's Picks

Latest Articles

Developed BY  Netfie.com