অর্থনীতি বার্তা | আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দুর্বল শাসনব্যবস্থার কারণেই বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন (হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি) ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। এ নিয়ে ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
তিনি গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভারতে ‘জাতীয় একতা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সরদার প্যাটেল স্মারক বক্তৃতায় এ কথা বলেন। আর গতকাল শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকার গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার পেয়েছে। রোববার (২ নভেম্বর) জাতীয় পত্রিকাগুলোতেও খবরটি গুরুত্ব পেয়েছে।
অজিত দোভাল বিগত কয়েক বছরে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ঘটে যাওয়া পরিবর্তন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘বিশাল সাম্রাজ্য, রাজতন্ত্র, গোষ্ঠীশাসন, অভিজাততন্ত্র বা গণতন্ত্রের উত্থান ও পতনের ইতিহাস আসলে তাদের শাসনেরই ইতিহাস। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং অন্যান্য দেশে অসাংবিধানিক পদ্ধতির মাধ্যমে সাম্প্রতিক শাসন পরিবর্তনের ঘটনাগুলো আসলে দুর্বল ও অদক্ষ শাসনেরই উদাহরণ।’
বাংলাদেশে ভারতের সবচেয়ে আস্থাভাজন মিত্র শেখ হাসিনার শাসনের পতন ঘটে গত বছরের আগস্টে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, ওই অভ্যুত্থানকালে প্রায় ১৪শ’ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। আর এই দমন-পীড়ন সমন্বয়ের ভূমিকায় ছিলেন খোদ শেখ হাসিনা।
অবশ্য এ নিয়ে তার বা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনুশোচনা নেই। এদের একটি অংশ গণঅভ্যুত্থানের পেছনে ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ প্রচার করে আসছে। বলে আসছে, পশ্চিমা শক্তির ইন্ধনে হাসিনার পতন ঘটেছে।
অবশ্য হাসিনার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে চলছে প্রস্তুতি। তবে গণহত্যার অভিযোগে বিচারের কারণে কার্যক্রমন নিষিদ্ধ হওয়ায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ।
কিন্তু এই সিদ্ধান্তে নাখোশ শেখ হাসিনা ও তার দল। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা তার দল আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান। এদিকে দোভালের এমন মন্তব্যে নানামুখী আলোচনা চলছে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
শাহেদ পারভেজ নামে একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘দুর্বল শাসন, তার মানে আর কত মানুষ হত্যা করলে সবল শাসন হবে । এত হত্যার পেছনে এই দোভালরা দায়ী!’
তবে তার বক্তব্যে ‘ভারতে সীমিত আকারে গণতন্ত্রের ইঙ্গিত’ প্রকাশ পেয়েছে বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেন।
